হরমোনের রোগ: কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা
Published on September 9, 2025
হরমোন কী?
হরমোন হলো আমাদের শরীরের রাসায়নিক বার্তাবাহক, যা রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে পৌঁছে শরীরের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন – বৃদ্ধি, প্রজনন, বিপাক, ঘুম, মানসিক অবস্থা ইত্যাদি। কিন্তু যখন এই হরমোনের মাত্রা বেশি বা কম হয়ে যায়, তখনই দেখা দেয় হরমোনের রোগ।
সাধারণ হরমোনজনিত রোগ
১. ডায়াবেটিস (Diabetes)
ইনসুলিন হরমোনের ঘাটতির কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।
লক্ষণ: অতিরিক্ত পিপাসা, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্লান্তি, ক্ষুধা বৃদ্ধি।
২. থাইরয়েডের রোগ (Thyroid Disorders)
থাইরয়েড হরমোন কম বা বেশি হলে শরীরের মেটাবলিজমে সমস্যা হয়।
হাইপোথাইরয়েডিজম (কম হরমোন) → ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, ঠান্ডা সহ্য না হওয়া।
হাইপারথাইরয়েডিজম (বেশি হরমোন) → ওজন কমে যাওয়া, অতিরিক্ত ঘাম, উদ্বেগ।
৩. পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS)
মহিলাদের প্রজনন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে অনিয়মিত মাসিক, ওজন বৃদ্ধি ও বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
৪. কুশিং’স সিন্ড্রোম (Cushing’s Syndrome)
কর্টিসল হরমোনের অতিরিক্ত নিঃসরণে স্থূলতা, মুখে ফোলা ভাব, উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
৫. গ্রোথ হরমোনের সমস্যা
শিশুদের ক্ষেত্রে হরমোন কম হলে খাটো হয়ে যাওয়া এবং বেশি হলে অস্বাভাবিক লম্বা হয়ে যাওয়া দেখা যায়।
হরমোনের রোগের প্রধান কারণ
বংশগত কারণ
অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
অতিরিক্ত স্ট্রেস
অনিয়মিত ঘুম
স্থূলতা বা অতিরিক্ত মোটা হওয়া
হরমোনের রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধ
✔ নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা
✔ সুষম খাদ্য গ্রহণ (শাকসবজি, ফল, প্রোটিন)
✔ নিয়মিত ব্যায়াম
✔ মানসিক চাপ কমানো
✔ পর্যাপ্ত ঘুম
✔ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
👉 দীর্ঘদিন ক্লান্তি, ওজন হঠাৎ কমে বা বেড়ে যাওয়া
👉 মাসিকের অনিয়ম
👉 ঘন ঘন প্রস্রাব বা অতিরিক্ত পিপাসা
👉 চুল পড়া বা ত্বকে অস্বাভাবিক পরিবর্তন
এমন উপসর্গগুলো থাকলে অবশ্যই এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট বা হরমোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
উপসংহার
হরমোন শরীরের ভারসাম্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সময়মতো সঠিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে হরমোনজনিত রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।